বিশেষ প্রতিনিধি, বিশেষ প্রতিনিধি।।
গাজায় নির্বিচার গণহত্যা ও মানবিক অবরোধ নিয়ে বৈশ্বিক চাপের মধ্যেই ইউরোপের কেন্দ্র থেকে ভেসে এলো স্পেনের বজ্রনিনাদ। ‘ইসরাইলের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা চাই’—আর তাতেই কাঁপতে শুরু করেছে তেল আবিব।
মঙ্গলবার ইসরাইলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদেওন সার বলেছেন, ‘যদি এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়, তবে বিলুপ্তি ঘটবে ইসরাইলের। ঘটবে দ্বিতীয় হলোকাস্ট (১৯৪০-এর দশকে নাৎসি জার্মানির হাতে ইহুদিদের ওপর গণহত্যা)’। সহজ ভাষায় মধ্যপ্রাচ্যের মানচিত্র থেকে মুছে যাবে ইসরাইল। এই প্রতিক্রিয়া শুধু আতঙ্ক নয়, ইসরাইলের যুদ্ধনির্ভর অস্তিত্বের স্বীকারোক্তি। ইসরাইল জানে, যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার রসদ কীভাবে কোথা থেকে আসে; কারা দেয়। আর সেই রসদ বন্ধের হুমকিই যেন তাদের অস্তিত্ব সংকটের আতঙ্ক ছড়িয়ে দিয়েছে দেশটির শীর্ষ নেতৃত্বে। মিডল ইস্ট আই, টাইমস অব ইসরাইল।
গাজায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাওয়ার মধ্যেই স্পেন ইসরাইলের বিরুদ্ধে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার আহবান জানিয়েছে। রোববার স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা পর্যায়ের ‘মাদ্রিদ প্রুপ’ বৈঠকে ইসরাইলের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহযোগিতা চুক্তি স্থগিত ও অস্ত্র রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার আহবান জানান দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোসে মানুয়েল আলবারেস। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের সবাইকে মিলিত হয়ে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞায় একমত হতে হবে।’
মঙ্গলবার পার্লামেন্টের এক অধিবেশনে ইসরাইলের বিরুদ্ধে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা বিলটি দ্রুত পাসের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির রাজনৈতিক দলগুলো। বিলটি জরুরিভিত্তিতে পাসের দাবিতে কংগ্রেসনাল ব্যুরোর কাছে একটি আবেদনও জমা দিয়েছেন নেতারা।
স্পেনের ওই বৈশ্বিক আহবান ও সংসদীয় পদক্ষেপের পরই কুঁকড়ে গেছে ইসরাইল। মঙ্গলবার জেরুজালেমে আন্তর্জাতিক প্রতিহিংসাবিরোধী সম্মেলনে গিদেওন সার বলেছেন, ‘যদি বৈশ্বিক চাপের মাধ্যমে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয় তাহলে ইসরাইল ধ্বংস হয়ে যাবে। এর ফলে ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ংকর গণহত্যার পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে।’
স্পেনের সেদিনের ওই ‘মাদ্রিদ প্রুপ’ বৈঠকে জার্মানি, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, ইতালি, মিসর, জর্ডান, সৌদি আরব, তুরস্ক, মরক্কো, ব্রাজিলসহ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন। দেশগুলোর মধ্যে মাত্র কয়েকটি ইসরাইলের কাছে অস্ত্র সরবরাহ করে থাকে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে ইসরাইলের অস্ত্র সরবরাহের প্রায় পুরোটা ভার তিনটি দেশ বহন করে যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি এবং ইতালি। যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলের সবচেয়ে বড় অস্ত্র সরবরাহকারী দেশ।